স্বাধীনতার ইতিহাস
মোঃ নূরুল ইসলাম মাস্টার
২৩/০৪/১৯৯৭ইং
স্বাধীনতার ইতিহাস অনেক৷ যে যার দৃষ্টিকোন থেকে আজ এ ইতিহাসের ছবি আঁকেন৷ ১৯৭১ সনের ১৬ই ডিসেম্বর দেশ হানাদারমুক্ত হল৷ ঢাকা রেসকোর্স ময়দানে ৯৬ হাজার সুশিক্ষিত পাক সেনা মিত্রবাহিনীর কাছে অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পন করল৷ ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে যে সমস্ত পাক সেনা নানা প্রতিকুলতার জন্য আসতে পারলো না তারা শেষ চেষ্টা করল পায়ে হোঁটে ঢাকায় পৌছতে৷ পথে এদের অনেকেই এ দেশের মুক্তি পাগল মানুষের কাছে নানাভাবে নিহত হল৷ তাদের রাস্তাঘাট সন্মদ্ধে সঠিক ধারনা ছিল না বলে তাদের এই পরিনতি মেনে নিতে হল৷ এমনি একজন পাক সেনা টাঙ্গাইলের মঙ্গলহোড় চকের মধ্যে মুক্তি বাহিনীর ধাওয়া খেয়ে এক গর্তের মধ্যে অবস্থান নিল৷ সঙ্গে তার একটি শক্তিশালী চাইনিজ স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ছিল৷ খাদ্য কষ্ট সাময়িক ভুলার জন্য খাওয়ার টেবলেট ও সামান্য পানি ছিল৷ গায়ে সৈনিকের পোশাক, শক্তিশালী গাট্টা জোয়ান৷ বয়স ২৫/২৬ হবে৷ ফর্সা সুন্দর পুরষ৷ হাতে পায়ে কাল খাট লোম৷ লোমগুলি শরীরের মধ্যে যেন রোয়ার মত বপন করা ছিল৷ আত্মসমর্পন করার আগ পর্যন্ত বীরের মত লড়ে যাচ্ছিল৷ চারদিন পর্যন্ত চকে ঐ গর্তে অবস্থান করে আত্মরক্ষা করল৷ স্থানীয় মুক্তিবাহিনী, স্বেচ্ছা সেবক বাহিনী, পুলিশ, বিডিআর, ইপিআর, তাকে গ্রেফতার করার জন্য অগ্রসর হয়ে ব্যর্থ হল৷ আমার ছাত্র আটিয়াবাসী মিজানুর রহমান একজন মুক্তিবাহিনীর সাহসী মুক্তিযোদ্ধা ছিল৷ অসীম সাহসে ভর করে বেশ দূর হতে অস্ত্র সহ হামাগুড়ি দিয়ে অগ্রসর হল৷ সময়টা ছিল সকাল দশটার মত৷ তার এহেন দৃশ্য দেখার জন্য আশে পাশের গ্রাম গঞ্জের মানুষ ও মুক্তি বাহিনীর জোয়ানরা বেশ দূর থেকে উদবিগ্নভাবে সময় কাটাতে লাগল৷ পাক সেনার গর্তের হাত কয়েক দূরে থাকতেই সে মিজানকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে৷ যেহেতু হামাগুড়ি দিয়ে চলছিল তাই গুলিটা মিজানের ঘাড়ের পাশ দিয়ে দেহের অভ্যন্তরে ডুকে গেল৷ গুলি খেয়ে পিছু হটে নিরাপদ দূরে এসেই মৃতু্যর কোলে ঢলে পড়ল৷ তাকে ধরাধরি করে বাড়িতে নিয়ে আসা হল৷ স্থানীয় মুক্তি দ্বারা পূর্ন সামরিক মর্যাদায় আটিয়া মাজার প্রাঙ্গনে তাঁকে সমাহিত করা হল৷
ওদিকে পাক সেনাটি চারদিন যায় কিছুতেই আত্মসমর্পন করছে না৷ হ্যান্ড মাইক দিয়ে মুক্তি বাহিনীর পক্ষ থেকে আত্ম সমর্পন করার নির্দেশ বার বার ঘোষনা করা হল৷ ক্ষুদায় কাতর, অবশন্য, খোলা আবহাওয়ায় অশেষ কষ্ট পাচ্ছিল৷ শেষে সে ঘোষনা দিল যে, আত্ম সমর্পন করতে রাজি আছে যদি কোন মুসলমান ওজু করে কোরান হাতে নিয়ে তার কাছে আসে৷ কিন্তু এ কথায় কেউই রাজি হল না৷ পাঁচ দিনের দিন মৃতপ্রায় পাক সেনাটি বিনা বাধায় আত্মসমর্পন করল৷ আটিয়া, মঙ্গলহোড় বিভিন্ন জায়গার মুক্তি বাহিনী ও স্বেচ্ছা সেবাক বাহিনীর জোয়ানরা করটিয়া অবস্থানরত বায়জিদ মুক্তি বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার পথে
মোঃ নূরুল ইসলাম মাস্টার
২৩/০৪/১৯৯৭ইং
স্বাধীনতার ইতিহাস অনেক৷ যে যার দৃষ্টিকোন থেকে আজ এ ইতিহাসের ছবি আঁকেন৷ ১৯৭১ সনের ১৬ই ডিসেম্বর দেশ হানাদারমুক্ত হল৷ ঢাকা রেসকোর্স ময়দানে ৯৬ হাজার সুশিক্ষিত পাক সেনা মিত্রবাহিনীর কাছে অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পন করল৷ ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে যে সমস্ত পাক সেনা নানা প্রতিকুলতার জন্য আসতে পারলো না তারা শেষ চেষ্টা করল পায়ে হোঁটে ঢাকায় পৌছতে৷ পথে এদের অনেকেই এ দেশের মুক্তি পাগল মানুষের কাছে নানাভাবে নিহত হল৷ তাদের রাস্তাঘাট সন্মদ্ধে সঠিক ধারনা ছিল না বলে তাদের এই পরিনতি মেনে নিতে হল৷ এমনি একজন পাক সেনা টাঙ্গাইলের মঙ্গলহোড় চকের মধ্যে মুক্তি বাহিনীর ধাওয়া খেয়ে এক গর্তের মধ্যে অবস্থান নিল৷ সঙ্গে তার একটি শক্তিশালী চাইনিজ স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ছিল৷ খাদ্য কষ্ট সাময়িক ভুলার জন্য খাওয়ার টেবলেট ও সামান্য পানি ছিল৷ গায়ে সৈনিকের পোশাক, শক্তিশালী গাট্টা জোয়ান৷ বয়স ২৫/২৬ হবে৷ ফর্সা সুন্দর পুরষ৷ হাতে পায়ে কাল খাট লোম৷ লোমগুলি শরীরের মধ্যে যেন রোয়ার মত বপন করা ছিল৷ আত্মসমর্পন করার আগ পর্যন্ত বীরের মত লড়ে যাচ্ছিল৷ চারদিন পর্যন্ত চকে ঐ গর্তে অবস্থান করে আত্মরক্ষা করল৷ স্থানীয় মুক্তিবাহিনী, স্বেচ্ছা সেবক বাহিনী, পুলিশ, বিডিআর, ইপিআর, তাকে গ্রেফতার করার জন্য অগ্রসর হয়ে ব্যর্থ হল৷ আমার ছাত্র আটিয়াবাসী মিজানুর রহমান একজন মুক্তিবাহিনীর সাহসী মুক্তিযোদ্ধা ছিল৷ অসীম সাহসে ভর করে বেশ দূর হতে অস্ত্র সহ হামাগুড়ি দিয়ে অগ্রসর হল৷ সময়টা ছিল সকাল দশটার মত৷ তার এহেন দৃশ্য দেখার জন্য আশে পাশের গ্রাম গঞ্জের মানুষ ও মুক্তি বাহিনীর জোয়ানরা বেশ দূর থেকে উদবিগ্নভাবে সময় কাটাতে লাগল৷ পাক সেনার গর্তের হাত কয়েক দূরে থাকতেই সে মিজানকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে৷ যেহেতু হামাগুড়ি দিয়ে চলছিল তাই গুলিটা মিজানের ঘাড়ের পাশ দিয়ে দেহের অভ্যন্তরে ডুকে গেল৷ গুলি খেয়ে পিছু হটে নিরাপদ দূরে এসেই মৃতু্যর কোলে ঢলে পড়ল৷ তাকে ধরাধরি করে বাড়িতে নিয়ে আসা হল৷ স্থানীয় মুক্তি দ্বারা পূর্ন সামরিক মর্যাদায় আটিয়া মাজার প্রাঙ্গনে তাঁকে সমাহিত করা হল৷
ওদিকে পাক সেনাটি চারদিন যায় কিছুতেই আত্মসমর্পন করছে না৷ হ্যান্ড মাইক দিয়ে মুক্তি বাহিনীর পক্ষ থেকে আত্ম সমর্পন করার নির্দেশ বার বার ঘোষনা করা হল৷ ক্ষুদায় কাতর, অবশন্য, খোলা আবহাওয়ায় অশেষ কষ্ট পাচ্ছিল৷ শেষে সে ঘোষনা দিল যে, আত্ম সমর্পন করতে রাজি আছে যদি কোন মুসলমান ওজু করে কোরান হাতে নিয়ে তার কাছে আসে৷ কিন্তু এ কথায় কেউই রাজি হল না৷ পাঁচ দিনের দিন মৃতপ্রায় পাক সেনাটি বিনা বাধায় আত্মসমর্পন করল৷ আটিয়া, মঙ্গলহোড় বিভিন্ন জায়গার মুক্তি বাহিনী ও স্বেচ্ছা সেবাক বাহিনীর জোয়ানরা করটিয়া অবস্থানরত বায়জিদ মুক্তি বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার পথে